চীনে প্রযুক্তির জগতে এক নতুন ঢেউ উঠেছে—এআই বয়ফ্রেন্ড! হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই এখন বাস্তব। অনেক চীনা নারী এখন বেছে নিঈআই বয়ফ্রেন্ড: চীনে নতুন প্রেমের ট্রেন্ড, ভবিষ্যৎ কি বদলে যাবে?
চীনে প্রযুক্তির জগতে এক নতুন ঢেউ উঠেছে—এআই বয়ফ্রেন্ড! হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই এখন বাস্তব। অনেক চীনা নারী এখন বেছে নিচ্ছেন এমন একজন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-চালিত সঙ্গীকে, যিনি কখনো বিরক্ত হন না, সবসময় মনের কথা বোঝেন, এবং আবেগের প্রতি সংবেদনশীল থাকেন। কিন্তু কেন এই ট্রেন্ড শুরু হলো? এর পেছনে কী কারণ, এবং এটা কি আমাদের সম্পর্কের ধরনকে চিরতরে বদলে দেবে?
চীনের জনসংখ্যার লিঙ্গ ভারসাম্যহীনতা এই ট্রেন্ডের একটি বড় কারণ। অতীতে ‘এক সন্তান নীতি’র ফলে পুরুষের সংখ্যা নারীদের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে গেছে। ফলে, অনেক নারী তাদের পছন্দের জীবনসঙ্গী খুঁজে পাচ্ছেন না। এছাড়া, আধুনিক চীনা নারীরা এখন ক্যারিয়ারমুখী এবং স্বাধীন। তারা বাস্তব সম্পর্কের জটিলতা, সামাজিক চাপ, এবং বাধ্যবাধকতা এড়াতে চান। এআই বয়ফ্রেন্ড তাদের দিচ্ছে একটি ঝামেলামুক্ত, আবেগপূর্ণ সংযোগ, যেখানে কোনো তর্ক বা মান-অভিমান নেই।
এআই বয়ফ্রেন্ড কেবল কোনো চ্যাটবট নয়, এটি অনেক বেশি উন্নত। XiaoIce বা Replika-এর মতো অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীর আচরণ বিশ্লেষণ করে, তাদের পছন্দ-অপছন্দ বোঝে, এবং সেই অনুযায়ী কথা বলে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি বলেন, “আমার মন খারাপ,” তাহলে এআই বলতে পারে, “কী হয়েছে? আমি তোমার পাশে আছি!” এই অ্যাপগুলো ২৪/৭ উপলব্ধ এবং সময়ের সঙ্গে ব্যবহারকারীর কথার ধরন শিখে আরও বাস্তবসম্মত হয়ে ওঠে।
তবে এআই বয়ফ্রেন্ড সবকিছু নিখুঁত নয়। এটি বাস্তব মানুষ নয়, তাই এতে আসল সম্পর্কের গভীরতা বা উষ্ণতা নেই। অনেকে মনে করেন, এটি মানুষকে আরও একাকী করে তুলতে পারে, কারণ এআই কখনোই মানুষের বিকল্প হতে পারে না। এছাড়া, এটি সামাজিক বন্ধনকে দুর্বল করে দিতে পারে বলেও উদ্বেগ রয়েছে। প্রযুক্তি আরও উন্নত হলে এআই আরও বাস্তবসম্মত হবে, কিন্তু এটি কি আমাদের জন্য ভালো, নাকি নতুন সমস্যা তৈরি করবে?
চীনে এই ট্রেন্ড দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে এআই বয়ফ্রেন্ড আরও বাস্তবসম্মত হতে পারে। তবে এটি মানবিক সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি কীভাবে বদলাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। এআই কি নিঃসঙ্গতা কমাবে, নাকি আমাদের আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলবে?
Tags:
প্রযুক্তির আলাপ