ডিজিটাল যুগে আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে জড়িত। এই মাধ্যম আমাদের তথ্য জানার, যোগাযোগের, বিনোদনের এবং মত প্রকাশের অসাধারণ একটি প্ল্যাটফর্ম হলেও, অতিরিক্ত ব্যবহারে এটি মানসিক স্বাস্থ্য, পারিবারিক সম্পর্ক এবং ব্যক্তিগত উৎপাদনশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে প্রশ্ন উঠে—সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের সময় কতটা এবং কেমন হওয়া উচিত? গবেষণা বলছে, দৈনিক ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টার মাঝামাঝি সময় সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য বরাদ্দ করাই স্বাস্থ্যসম্মত। এই সময়ের মধ্যে আমরা খবর পড়া, গুরুত্বপূর্ণ বার্তার জবাব দেওয়া বা প্রয়োজনীয় কনটেন্ট দেখা/শেয়ার করার মতো কার্যকর কাজ করতে পারি। এর বেশি সময় ব্যয় করলে মস্তিষ্কে ডোপামিনের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করতে পারে, যার ফলে মানসিক অস্থিরতা, হীনমন্যতা, ঘুমের ব্যাঘাত, এবং আসক্তির ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা, “do not disturb” মোড চালু রাখা, এবং অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন বন্ধ রাখার মাধ্যমে নিজের ফোকাস ও সময় ব্যবস্থাপনা উন্নত করা সম্ভব।
একইসঙ্গে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কী ধরণের কনটেন্ট আমরা গ্রহণ বা প্রচার করছি, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। নেতিবাচক ও বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট থেকে দূরে থেকে, শিক্ষামূলক, বৈজ্ঞানিক, বা সমাজগঠনমূলক কনটেন্টে মনোযোগী হওয়া উচিত। মনে রাখা দরকার, সোশ্যাল মিডিয়া যেন আমাদের নিয়ন্ত্রণ না করে, আমরা যেন এটিকে প্রয়োজনমতো নিয়ন্ত্রণ করি। তাই নিজের অভ্যাস বিশ্লেষণ করে সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং ভার্চুয়াল জীবনের পাশাপাশি বাস্তব জীবনের সঙ্গে ভারসাম্য রাখা—এটাই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সর্বোত্তম পথ।
Tags:
প্রযুক্তির আলাপ