আপনি কি জানেন, প্রতি বছর পৃথিবী সূর্য থেকে প্রায় ৫ সেন্টিমিটার করে দূরে সরে যাচ্ছে? শুনতে বিষয়টি খুব সামান্য মনে হলেও, মহাবিশ্বের বিশাল সময়সীমার বিচারে এটি একেবারেই অবহেলার মতো নয়। কারণ, সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টান এবং পৃথিবীর কক্ষপথের সূক্ষ্ম পরিবর্তনই আমাদের আবহাওয়া, জলবায়ু, ঋতুচক্র এবং প্রাণের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এই ধীরগতির দূরত্ব বৃদ্ধির পেছনে মূলত রয়েছে টাইডাল ফোর্স বা জোয়ারভাটার টানাপোড়েন, যা পৃথিবী ও চন্দ্রের পারস্পরিক আকর্ষণ এবং সূর্যের প্রতি প্রতিক্রিয়ার কারণে জন্ম নেয়। যদিও এখনই আমরা এই পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব তেমন একটা টের পাচ্ছি না, তবে লক্ষ লক্ষ কিংবা কোটি কোটি বছর পেরিয়ে গেলে এটি পৃথিবীর তাপমাত্রা কমে যাওয়া, বরফ যুগের ফিরে আসা বা এমনকি প্রাণবৈচিত্র্যের বিবর্তনেও প্রভাব ফেলতে পারে।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, সূর্য থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাওয়া মানে কেবল একটি কক্ষপথের পরিবর্তন নয়, বরং সেটি আমাদের গ্রহের ভবিষ্যৎ জীবনধারার দিকেও এক গোপন সংকেত বয়ে নিয়ে আসছে। প্রশ্ন উঠছে, এই গতি যদি বাড়ে? যদি সূর্যের তাপ আর আমাদের নাগালেই না আসে? তাহলে কী হবে আমাদের এই নীল গ্রহের ভবিষ্যৎ? আমরা কি তখনও টিকে থাকতে পারবো? সেই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে সময়ের গভীরে, কিন্তু বিজ্ঞান আজই আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছে—মহাবিশ্বে কোনো পরিবর্তনই চুপিসারে ঘটে না। প্রতিটি মৃদু পদচিহ্নই ভবিষ্যতের দিকচিহ্ন হয়ে ওঠে।
ছবি: আইস্টক
Tags:
রহস্য জগৎ